বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ১২:৩১ পূর্বাহ্ন

দুর্নীতির মামলায় স্ত্রীসহ এমটিবির সাবেক এভিপির কারাদণ্ড

নিউজ ডেস্কঃ দুদকের করা মামলায় মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের বনানী শাখার সাবেক অ্যাসিস্টেন্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট (এভিপি) জাহিদ সারোয়ারের ২৪ বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই ঘটনায় করা মামলায় তার স্ত্রী ফারহানা হাবিবের সাত বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।

সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৯ এর বিচারক শেখ হাফিজুর রহমান এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা পলাতক থাকায় আদালত তাদের বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানাসহ গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী সাইফুল ইসলাম মিঠু বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

রায়ে আসামি জাহিদ সারোয়ারকে দণ্ডবিধির ৪০৯ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ১ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। একই আইনের ৪৬৭ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে ৭ বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড, ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ১ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ এর ৪ (২) ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে ৭ বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়েছে।

অপর আসামি ফারহানা হাবিবাকে দণ্ডবিধির ৪০৯/১০৯ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে ৩ বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড, ৩০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ১ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ এর ৪(২) ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে ৪ বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়েছে।

এছাড়া আসামি জাহিদ সারোয়ারকে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ এর ৪(২) ধারা মতে অপরাধের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সম্পত্তির দ্বিগুণ, অর্থাৎ ৫ কোটি ৪৭ লাখ ৬০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড এবং আসামি ফারহানা হাবিবকে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ এর ৪ (২) ধারা মতে অপরাধের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সম্পত্তির দ্বিগুণ অর্থাৎ ৪ কোটি ৪৮ লাখ টাকা অর্থদণ্ডের আদেশ দেন আদালত। আদায়কৃত অর্থদণ্ডের ৫০ শতাংশ একই আইনের ৪(৩) ধারা মতে রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। অর্থদণ্ডের বাকি অর্থ মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেড, বনানী শাখায় জমা দেওয়া হবে। আসামিদের বিরুদ্ধে অর্থদণ্ডের টাকা ৬০ দিনের মধ্য পরিশোধের নির্দেশ দেন আদালত।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, জাহিদ সারোয়ার ও ফারহানা হাবিব পরস্পর যোগসাজশে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক লি. এর বনানী শাখার প্রিভিলেজ গ্রাহক ফেরদৌসী আমান নামীয় একজনের ক্ষমতার অপব্যবহার ও প্রতারণার আশ্রয়ে অপরাধজনক বিশ্বাসভঙ্গের মাধ্যমে হিসাবধারীর স্বাক্ষর জাল করেন। জাল স্বাক্ষরের মাধ্যমে এসএমএস মোবাইল ব্যাংকিংয়ের জন্য গ্রাহকের নম্বর পরিবর্তন করে নিজের নম্বরটি পরিবর্তিত নম্বর হিসেবে ব্যবহার করেন। ফেরদৌসী জামানের স্বাক্ষর জাল করে ৪টি চেক বই সংগ্রহ করেন। তাকে তিনটি চেক বই না দিয়ে নিজে রেখে দেন। তিনটি চেক বইয়ের ৬০টি চেকের পাতায় ফেরদৌসী জামানের স্বাক্ষর জাল করে এবং ১৬টি চেকে গ্রাহকের বেয়ারার ইশতিয়াক হোসেন তালুকদারের স্বাক্ষর জাল করে চার কোটি ৯৭ লাখ ৮০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেন। আত্মসাতকৃত টাকা হতে প্রায় ২ কোটি ২৪ লাখ টাকা ব্র্যাক ব্যাংক লি. এর বসুন্ধরা শাখায় তার স্ত্রী ফারহানা হাবিবের মালিকানাধীন আশা ক্রিয়েশন নামীয় হিসাব নম্বরে জমা করেন। ২০১৬ সালের ২৬ এপ্রিল ব্যাংক হিসাব খোলা থেকে শুরু করে ওই বছরের ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত এসব ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় দুদকের সহকারী পরিচালক শফি উল্লাহ ২০১৯ সালের ১০ ডিসেম্বর মামলাটি দায়ের করেন। গত বছরের ২৫ জানুয়ারি মামলাটির তদন্ত করে দুজনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক মো. শফি উল্লাহ। এরপর চার্জগঠন করে দুজনের বিরুদ্ধে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। মামলাটির বিচার চলাকালে ২৫ জন সাক্ষীর মধ্যে ২৩ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেছেন আদালত।


Leave a Reply

Your email address will not be published.

Design & Developed BY N Host BD